ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলতে কি কি লাগে? কিভাবে খুব সহজে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলবেন

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলতে কি কি লাগে? কিভাবে খুব সহজে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলবেন

বর্তমানে সকল পেশার মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে চাকুরিজীবী কিংবা একজন কৃষকেরও একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হয়। ছাত্রছাত্রীদের কথা যদি বলা হয় তবে তাদেরও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুবই দরকারি হওয়া সত্ত্বেও আমরা অনেকেই জানিনা- কিভাবে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলতে হয়।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলতে কি কি লাগে? কিভাবে খুব সহজে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলবেন


ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে; আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে ধারণা রাখতে হয়। ব্যাংকের সাথে সম্পর্ক না থাকায় আমরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কেও বিস্তারিত জানিনা। তাই আজকে আমরা ঢাকা স্টাফের পক্ষ থেকে- কিভাবে একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করবো৷ আমরা ব্যাংকিং সেক্টরের যাবতীয় খুটিনাটি বিষয় নিয়েও আলোচনা করবো। আশাকরি, আমাদের ব্লগটি পড়ার পর ব্যাংকিং সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।

আলোচ্য বিষয়
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রকারভেদ
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে দরকারি কাগজপত্র
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলবেন যেভাবে
  • কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা ভালো

ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রকারভেদ

ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলতে গিয়ে প্রথম যে সমস্যায় আমরা পড়ি সেটি হলো- কি ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলতে হবে সেটি আমরা জানিনা। ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার আগে সবারই জানা উচিত যে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কত প্রকার এবং আপনি কোন একাউন্টি খোলবেন। বাংলাদেশে সাধারণত দুই ধরণের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রচলিত রয়েছে। যেমন-

  • সেভিংস অ্যাকাউন্ট: এই ধরণের অ্যাকাউন্টগুলো সাধারণত ব্যাক্তিগতভাবে টাকা জমিয়ে রাখার জন্য খোলা হয়। ১৮ বছরের উর্ধ্বে যেকোন ব্যাক্তি তাদের নিজ নামে বা অন্যকোন নামে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলতে পারে৷ এই ধরনের অ্যাকাউন্টগুলোতে মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা, নির্দিষ্ট সংখ্যকবার ডিপোজিট ও উইথড্র করা যায়। এছাড়াও এই ধরনের অ্যাকাউন্টে জমানো টাকার উপর ব্যাংকভেদে আলাদা আলাদা মুনাফা বা ইন্টারেস্ট পাওয়া যায়।

  • কারেন্ট অ্যাকাউন্ট: এই ধরনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো কেবলমাত্র ব্যাবসায়ীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেকোন পরিমাণ অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। কারেন্ট অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের উপর কোন মুনাফা দেওয়া হয়না তবে ব্যাংকভেদে কোন কোন ব্যাংক মুনাফা দিলেও তার হার খুবই কম। এই ধরনের হিসাবে মাসে যত খুশি ততবার লেনদেন করা যায়।

এছাড়াও ব্যাংকভেদে এফডিআর, ডিপিএস ইত্যাদি ধরনের অসংখ্য অ্যাকাউন্ট রয়েছে যা পরবর্তিতে গুগল সার্চ করে কিংবা ব্যাংকিং সেক্টরে থাকলে জেনে যাবেন। 

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলতে দরকারি কাগজপত্র

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলতে চাইলে ব্যাংকভেদে প্রায় একই রকম কাগজপত্রের দরকার পড়বে তবে অ্যাকাউন্টের ধরণ অনুযায়ী কাগজপত্রের ভিন্নতা থাকবে। সাধারণত, সেভিংস অ্যাকাউন্টে যেসকল নথিপত্রের প্রয়োজন পড়ে; কারেন্ট অ্যাকাউন্টেও সেগুলোর প্রয়োজন পড়ে পাশাপাশি কারেন্ট অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিছু কাগজপত্র দেখাতে হয়।
সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলতে দরকারি কাগজপত্র-
  • অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফর্ম।
  • ২কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • ১কপি পাসপোর্ট সাইজের নমিনির ফটো
  • ন্যাশনাল আইডি কার্ড।
  • পরিচয়দাতা

কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলতে চাইলে উপরোক্ত ডকুমেন্টের পাশাপাশি দোকান কিংবা ব্যাবসার ই-টিআইএন নাম্বার ও ইনকাম সোর্স ডকুমেন্ট সংযুক্ত করতে হবে।


ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পুরো প্রক্রিয়া

প্রথমে আপনাকে পছন্দমতো যেকোন ব্যাংকের শাখায় যেতে হবে। আপনি কোন প্রকারের অ্যাকাউন্ট খোলবেন সেটি অনুযায়ী কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে- সেভিংস অ্যাকাউন্ট যে কেউ খোলতে পারলেও কারেন্ট অ্যাকাউন্ট কেবল ব্যাবসায়ীদের জন্য। সুতরাং আগেভাগেই সব মনস্থির করে তারপর ব্যাংকে যান।

ব্যাংকে যাওয়ার পর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ওপেনিং ফর্ম কালেক্ট করুন। সেখানে আপনাকে সাহায্য করার জন্য অনেক ব্যাংক কর্মকর্তাই এগিয়ে আসবেন এবং তারা আপনার ফর্ম ফিলআপ করতে সাহায্য করবেন। আপনি তাদের সাহায্য নিয়ে ফর্মটি পূরণ করুন।

প্রাথমিক ডিপোজিট অ্যামাউন্ট হিসেবে ব্যাংকভেদে ৫০০টাকা থেকে ১০০০টাকা জমা দিতে হয়। অনেকক্ষেত্রে ঠিকানা কনফার্মেশনের জন্য বিদ্যুৎ বিলের কপিও চাইতে পারে সেক্ষেত্রে সেটি আগে থেকে নিয়ে গেলেই বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ হয়। না নিয়ে গেলেও সমস্যা নেই- কর্মকর্তারা নিজেরাই সবকিছু গুছিয়ে দিবেন।

ফর্ম ফিলআপ সম্পন্ন হওয়ার পর আপনাকে দু একদিন পর অ্যাকাউন্ট নাম্বারসহ এটিএম কার্ড, চেক বই ইত্যাদি সংগ্রহ করতে বলবে। যথারীতি তাদের অনুসরণ করে সেগুলো কালেকশন করুন।

কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভালো?

বাংলাদেশে মোটামুটি সবগুলো ব্যাংকই ঝুকিমুক্ত হলেও সম্পূর্ণ ঝুঁকিহীন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলাই শ্রেয়তম। সত্যি বলতে সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত ব্যাংক নির্দিষ্ট করে বলা খুব কঠিন তবে কিছু ব্যাংক আছে যেগুলো অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য যেমন-


এছাড়া সরকারী ব্যাংকগুলোও অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য। যে কেউ চাইলে এক বা একাধিক যেকোন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলতে পারেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ