প্রযুক্তির উন্নয়ন যত বেড়েছে সমানতালে বেড়েছে ভাইরাসের উপদ্রবও। সাধারণত ভাইরাস হচ্ছে ফাইলখেকো কিছু প্রোগাম যা আপনার কম্পিউটারে ঢুকে আপনার যাবতীয় ফাইলগুলোকে নষ্ট করে ফেলে। এই ভাইরাসগুলো সাধারণত ছোয়াচে রোগের মত। এক কম্পিউটার থেকে অন্য আরেক কম্পিউটারে এটি সংস্পর্শ পেলেই প্রবাহিত হয়। এই সংস্পর্শ হতে পারে ইন্টারনেট কিংবা পেনড্রাইভ ইত্যাদি।
ভাইরাসেরও আবার কতিপয় ধরণ আছে। কিছু ভাইরাস যেগুলো তেমন ক্ষতিকর নয়। এরুপ ভাইরাসগুলো আপনার ফাইল নষ্ট করার তেমন ক্ষমতা রাখেনা কিন্তু আপনার ফোল্ডারে অহেতুক ফাইল তৈরী করে বসে থাকে। আবার অনেক শক্তিশালী ভাইরাসও আছে যারা কিনা যেকোন ফাইলকে মুহুর্তের মধ্যেই খেয়ে ফেলে এমনকি আপনার কম্পিউটারে ঢুকার কয়েক মুহুর্তের মধ্যেই হার্ডডিস্ক নষ্ট করে ফেলে।
ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই যে বিষয়গুলোতে মনযোগ দিতে হবে তাহলো ভাইরাস আক্রমণের সুনির্দিষ্ট কারণগুলো জানা। যদি আপনি সম্পূর্ণরুপে জানতে পারেন যে, কেন এবং কিভাবে ভাইরাস এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে প্রবাহিত হয় তাহলে আপনি সহজেই এসব ফাইলখেকো থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন।
প্রথমেই বলা হয়েছে, ভাইরাস ছোয়াচে রোগের মত যা পেনড্রাইভ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে প্রবাহিত হয়। এছাড়া সিডি ড্রাইভের মাধ্যমেও ভাইরাস এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে প্রবাহিত হয়।
আমাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য ইন্টারনেট ছাড়া চলা সম্ভব নয়। পেনড্রাইভ ছাড়া ডাটা আদান প্রদান করা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য। সে হিসেবে এসব ব্যাবহার না করলেই নয়।
এরজন্য আমাদের দরকার একটি শক্তিশালী এন্টিভাইরাস যা যেকোন শক্তিশালী ভাইরাসকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এরকম বহু এন্টিভাইরাস বাজারে আছে যেমন ক্যাস্পারস্কি, এভিরা, এভিজি, নরটন ইত্যাদি। টাকা দিয়ে কেনা এগুলোর জেনুইন ভার্সন সবগুলোই ভালো কিন্তু যারা ফ্রী চালাতে অভ্যস্ত তাদের জন্য ভালো বলে কোন কথা নেই। যেকোন এন্টিভাইরাসই আপনাকে খারাপের মধ্যে ভালো সার্ভিস দিবে।
আরেকটি কথা বলে দেওয়া উচিৎ, যারা উইন্ডোজ ১০ চালান তাদের ক্ষেত্রে এন্টিভাইরাস নিয়ে তেমন চিন্তার কিছু নাই কারণ উইন্ডোজ ১০ এ স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি এন্টিভাইরাস সেটাপ দেওয়া থাকে। এন্টিভাইরাসটির নাম উইন্ডোজ ডিফেন্ডার। অন্যান্য এন্টিভাইরাসের তুলনায় এটির সক্ষমতা কম নয়। যারা ফ্রী বলে নাক ছিটকান তারা হয়তো এটির মর্ম নাও বুঝতে পারেন কিন্তু সত্য বলতে এটির গুনগত মান অন্যান্য এন্টিভাইরাসের পেইড ভার্সনের থেকেই ভালো।
যারা পুরাতন উইন্ডোজে আছেন তাদের জন্য এন্টিভাইরাস সেটাপ দিয়ে রাখা মোটামুটি জুরুরী ই বলা যায়। যেহেতু আপনাকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হতেই হবে সেহেতু কালক্ষেপ না করে আপাতত যেকোন এন্টিভাইরাসের ট্রায়াল ভার্সন সেটাপ করুন।
অনেকসময় দেখা যায়, এন্টিভাইরাসের ফাক ফোকর দিয়ে ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারে ঢুকে যায় এজন্য আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত কম্পিউটার স্ক্যান করতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর উইন্ডোজ সেটাপ দিতে হবে যাতে করে ভাইরাস আপনার কম্পিউটারে বাসা বাধতে না পারে।
সবচেয়ে বেশি যে জুরুরি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত সেটি হলো উইন্ডোজের সর্বশেষ ভার্সন চালানো। আপনি যদি লিনাক্স ব্যবহারকারীও হোন সেক্ষেত্রেও সর্বশেষ ভার্সন ব্যবহার করুন। সর্বশেষ ভার্সন যেমন উইন্ডোজের ক্ষেত্রে উইন্ডোজ ১০। জরিপ অনুযায়ী পৃথিবীর প্রায় ৬০ শতাংশ কম্পিউটার ব্যাবহারকারী উইন্ডোজ ৭ ব্যাবহার করলেও উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের মত নিরাপত্তা তারা পান না যেকারণে বর্তমান সময়ে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের একটি বিরাট অংশ উইন্ডোজ ১০ এর দিকে ঝুকছেন। এছাড়াও মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা কোম্পানি জানিয়েছে, উইন্ডোজ ৭ তারা অতি শীঘ্রই বাজার থেকে তুলে নিবেন।
ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে হলে সবার আগে দরকার নিজ সচেতনতা। বর্তমান সময়ে আমরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো কম্পিউটারে রেখে দেই। ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্যাদি এমনকি টুকরো টুকরো স্মৃতির কিছু ছবিও রেখে দেই কম্পিউটারে। ভাইরাসের আক্রমনে সেগুলো নষ্ট হওয়ার আগেই আসুন, সচেতন হই।