চাকরি পেতে যোগ্যতা ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু করণীয় জেনে নিন

চাকরি পেতে যোগ্যতা ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু করণীয় জেনে নিন

একটি চাকরি ই তো খোঁজছেন নাকি? চুরি তো আর করতে চাচ্ছেন না। তাহলে পড়ুন চাকরি পেতে আপনার কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু করণীয় যা চাকরির বাজারে আপনাকে কয়েকধাপ এগিয়ে রাখবে।

বাংলাদেশের মতো একটি দেশে চাকরি পাওয়া অনেকটা লুডু খেলার মতো। ভাগ্যে কি আছে সেটি অনিশ্চিত৷ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি হচ্ছেনা এমন বেকারের সংখ্যা অগণিত। তারপরও মানুষ চাকরির আশায় ছুটছে। আপনিও চাকরি খোজছেন। কিভাবে একটি চাকরি পাওয়া যায় সেটির জন্য হন্যে হয়ে গুগলে সার্চ করছেন- "চাকরি চাই" কিংবা "চাকরি পাওয়ার দোয়া" ইত্যাদি।



"আসলে চাকরি পেতে কিছুই লাগেনা! শুধু টাকা হলেই চাকরিটা পেয়ে যাবেন" এরকম বহু কথা আমাদের সমাজে প্রচলিত। কথা একদম সত্য কারণ- মামা, খালু কিংবা টাকা থাকলে চাকরিটা হবেনা কেন? আসলে চাকরিটা মামা, খালু আর টাকা পয়সা ছাড়াও হয়! কিভাবে হয় আর কি কি এক্সট্রা যোগ্যতা লাগে সেটি নিয়ে আজকে আমরা কথা বলবো এবং সেই সাথে কিছু করণীয় নিয়ে জ্ঞানমূলক কথাও বলবো৷ দিনশেষে চাকরির বাজারে অন্তত ফুরফুরো তো থাকবেন!

চাকরি পেতে কিছু পরামর্শ তো থাকবেই তার সাথে আপনাদের সুবিধার জন্য আমরা আজকের লেখাটি কয়েকধাপে সম্পন্ন করতে চাই। প্রতিটা ধাপ অনুসরণ করলে; চাকরির বাজারে আপনাকে হয়তো হতাশ হতে হবেনা। আবারও বলছি; আজকের লেখায় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতার পাশাপাশি; অত্যাবশকীয় কিছু করনীয় নিয়ে আলোচনা করবো ধাপে ধাপে।


১. কিসের চাকরি করবেন সেটি ঠিক করুন

আমাদের দেশে সমস্যা হচ্ছে, এমবিবিএস পাশ করেও আপনি কিসের চাকরি করবেন তার ঠিক নেই আবার পদার্থবিদ্যায় গ্রাজুয়েশন করে দিনশেষে ইংরেজির মাস্টার হয়ে যান কি'না তা নিয়েও সংশয় হয়। মোটকথা হলো; আপনাকে এই অনিশ্চিত সংশয়ের জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে৷ ব্যাপারটি এমন নয় যে; আপনাকে বিষয়ভিত্তিক চাকরি ই করতে হবে বরং আপনাকে আগেভাগেই ঠিক করতে হবে যে- কোন বিষয়ে আপনি চাকরি করতে চান অথবা কোন বিষয়ের চাকরিগুলো আপনার জন্য পার্ফেক্ট। বিষয়ভিত্তিক চাকরি না পাওয়াটা আমাদের দেশে প্রকট। যদিও সিস্টেমটি পরিবর্তনের কোন লক্ষণ বা আভাস নেই তবুও এটির পরিবর্তন জুরুরী দরকার৷

  • যোগ্যতা: এক্ষেত্রে আপনি কোন পেশায় নিজেকে দেখতে চান এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে। বিষয়টা হালকা টাইপের মনে হতে পারে কিন্তু নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেন যে- আপনি কি হতে চান; আমি নিশ্চিত আপনি নিজেও জানেন না। কিসের চাকরি করবেন- এটি ঠিক করতে পারার চেয়ে বড় যোগ্যতা আর কি হতে পারে!

  • করণীয়: কিসের চাকরি করবেন- এটি মূলতঃ অনেকেরই গড়ে উঠে গ্রাজুয়েশন করার সময়। ছোটবেলা থেকে অনেকের অনেক ইচ্ছা থাকলেও মানুষ নিজেকে চেনে গ্রাজুয়েশন করার সময়। সুতরাং আপনি যদি এই মূহুর্তে গ্রাজুয়েশন করতে থাকা মানুষটি হোন তবে আপনি ভাবুন- কিসের চাকরিটা আপনার জন্য পার্ফেক্ট। দুয়েকদিন নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছাগুলো নিয়ে ভাবুন। পার্ফেক্ট ইচ্ছাটা পেয়ে যাবেন। 


  • ঝুঁকি ও সম্ভাবনা: চাকরির ক্ষেত্রটা ঠিক করার মধ্যে ঝুকি ও সম্ভাবনা দুটোই আছে। ঝুঁকি হলো চাকরির বিজ্ঞাপন সংখ্যা কমে গেল আর সম্ভাবনা হলো- আপনি আপনার পছন্দের জগতে ঢুকতে শুরু করলেন৷ চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা কয়েকগুন বেড়ে যাবে। ঝুঁকি যেখানে থাকে সফলতার বসবাস সেখানেই।

এই হলো আপনার প্রথম ধাপ। এই ধাপটি যদি সম্পন্ন করে থাকেন তবে দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার পালা। আর হ্যাঁ, আমি আবারও মনে করিয়ে দিই- আজকের লেখাটি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতার পাশাপাশি কিছু পরামর্শ বা জ্ঞান (যার কাছে যেটি মনে হতে পারে) দেওয়া হচ্ছে এই কারণে যে; ঢাকা স্টাফ আপনাদের জন্য সবসময় শুভকামনারত।


২. চাকরির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন

গ্রাজুয়েশন চলাকালীন অনেকেই চাকরির প্রস্তুতি নেন। একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরির জন্য সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি, ভূগোল পড়তে পড়তে অনেকের মাথা চুলশুন্য হয়ে যায়। হ্যাঁ, চাকরির জন্য অবশ্যই আপনাকে অতিরিক্ত বই পড়তে হবে কিন্তু আমরা আপনাকে এই বই পড়া প্রস্তুতির কথা বলছি না বরং মানসিক প্রস্তুতির কথা বলছি৷ মানসিক প্রস্তুতিটা কেমন? এই ধরুন, বাসায় যেমন বাচ্চা বাচ্চা মানসিকতার আচরণ করেন, সেরকম আচরণগুলোর পরিবর্তন করুন। একটু প্রফেশনাল হোন। কথাবার্তাগুলো একটু সাবলিল করুন। অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে বিনয়ী হওয়ার পাশাপাশি স্মার্টলি কথা বলুন। এগুলো মানসিক প্রস্তুতি; এগুলোর প্রয়োজন সামনে পড়বে তাই নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করুন।

  • যোগ্যতা: এক্ষেত্রে নিজেকে গুছানোর যোগ্যতাই আসল এবং গুরুত্বপূর্ণ। চাকরির জন্য অতিরিক্ত পড়ালেখা তো অবশ্যই করবেন পাশাপাশি এই দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। মানুষের সাথে অমায়িক আচরণ এবং বিনয়ী হওয়া এগুলো এক দুই দিনের বিষয় নয়। সুতরাং দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এই যোগ্যতাটি অনেক প্যারা দিতে পারে তবে চেষ্টা করলে অবশ্যই চাকরির জন্য প্রস্তুতিটা দারুনভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।

  • করণীয়: ব্যাপারটি এমন নয় যে, নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে অন্যরুপ ধারণ করতে হবে। আপনি নিজের মধ্য থেকেই যেগুলো নেতিবাচক সেগুলো পরিহার করুন। চাকরির বাজারে এই প্রস্তুতিটুকু আপনার জন্য হতে পারে সম্ভাবনাময়। গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করতে করতে এমনিতেই নিজের আচরণে পরিবর্তন চলে আসে তবুও যাদের ক্ষেত্রে এটি আসেনি তারা বাসায় কিংবা হাটতে চলতে নিজেকে একটু পরিবর্তন করুন।

  • সাবধানতা: অবশ্যই স্মার্ট হতে গিয়ে ওভার স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আবারও বলছি, স্বকীয়তা অর্থাৎ নিজের ভালো বৈশিষ্ট্যগুলোকে ধরে কেবল নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো পরিবর্তন করুন। প্রফেশনাল হতে গিয়ে কারো সাথে মনোমালিন্য না করাই শ্রেয়।


৩. চাকরির জন্য সিভির ওজন বাড়ান

সিভি বা কারিকুলাম ভিটার ওজন কেমনে বাড়ায়? ওজন বাড়ানোর মানে কি? চাকরির জন্য সিভির ওজন কেন বাড়াবো? উত্তর দিচ্ছি। আপনি যখন সিভিটা লিখেন তখন সিভির একপাশে "অভিজ্ঞতা" বা অন্যান্য কাজের দক্ষতা সংক্রান্ত একটি "এক্সপেরিয়েন্স" লিস্ট তৈরি করেন। বিশ্বাস করেন বা না করেন; একজন চাকরিদাতা আগে এক্সপেরিয়েন্সের লিস্ট টা দেখে৷ যার যত এক্সপেরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতা তার সিভির ওজন তত বেশি। আশাকরি, সিভির ওজন সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। সিভির ওজন বাড়ানোর কারণ হচ্ছে; অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান চাকরিদানের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাকে মাপকাঠি হিসেবে গণ্য করে।

  • কি কি অভিজ্ঞতার প্রয়োজন: এবার মনে করুন ১ নাম্বার পয়েন্ট টা। আপনি যে সেক্টরে চাকরি করবেন বলে ঠিক করে রাখছেন সেই সেক্টর সংক্রান্ত যেকোন দুই বা ততোধিক অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। আপনি যখন চাকরির বিষয়বস্তু ঠিক করে ফেলবেন তখন অভিজ্ঞতা অর্জনও সহজ হয়ে যাবে। বিষয়বস্তু ঠিক করতে না পারলে; অভিজ্ঞতা অর্জনে খটকা লাগবে।

  • যোগ্যতা: এক্ষেত্রে যোগ্যতা হিসেবে প্রয়োজন হবে, ইগোহীন মন-মানসিকতা। ব্যাপারটি খোলাসা করার চেষ্টা করছি, ধরুন, আপনি একটি কলেজে ইংরেজির টিচার হওয়ার জন্য আবেদন করবেন। সেখানে আবেদন করার আগে বিভিন্ন ছোটখাটো স্কুল কিংবা কোচিং এ ইংরেজি বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার মন-মানসিকতা থাকতে হবে। 

  • করণীয়: গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর যে বিষয়ে চাকরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে বিষয়ে ছোটখাটো প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করুন৷ প্রয়োজনে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করুন। বিএসসি পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার হয়েও প্রয়োজনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কাজ করুন অর্থাৎ গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর বসে না থেকে লেগে থাকুন। নেহায়েত যদি ছোটখাটো কাজ করার সুযোগও না পান তবে বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়ার্ক করুন। কোন মানবিক সংগঠনে কাজ করুন।

[বিঃদ্রঃ "চাকরি পেতে যোগ্যতা ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু করণীয়" লেখাটি স্বত্বাধিকারী কেবল ঢাকা স্টাফ। অন্য যেকোন ওয়েবসাইটে লেখাটি কপি-পেস্ট করা হলে সেই ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে গুগল এডসেন্স বরাবর ডিএমসিএ লেটার পাঠানো হবে।]

৪. চাকরির খবর দেখে যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিন

মাঠে ঘাটে কিংবা দেয়ালে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই পাগল হয়ে যান। এই বুঝি চাকরিটা হয়ে গেল। না- এমন পাগল না হওয়ার জন্যই দুই নম্বর অপশনটি বলা হয়েছে। চাকরির যেকোন বিজ্ঞাপন দেখে বিচলিত না হয়ে বরং বিজ্ঞাপন সম্পর্কে ভাবুন। সত্য মিথ্যা যাচাই করুন। আজকাল নামিদামি পত্রিকাতেও ভূইফোর চাকরির বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়। অনেকেই এসব চাকরির অফারের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে ফেলেন৷ বিশ্বস্ত যেকোন সোর্স থেকে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে সিদ্ধান্ত নিন।

  • যোগ্যতা: সত্য মিথ্যা যাচাই এর যোগ্যতা টা পূর্ণ থাকতে হবে। দূর্বল চিত্তের মানুষ হলে চাকরির নামে সর্বস্ব হারানোর ঝুঁকি থাকবে। যোগ্যতার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় যোগ করতে চাই, চাকরির খবর পেয়ে তাড়াহুড়ো না করার সক্ষমতা থাকা বাঞ্চনীয়।

  • করণীয়: চাকরির খবর বা চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে আপনি প্রথমে নির্নয় করুন- চাকরিটি আপনার জন্য কি'না। তারপর আপনার সিলেক্টেড চাকরি হলে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান নিয়ে গুগলে একটু ঘাটাঘাটি করুন। প্রতিষ্ঠানটি ভ্যালিড হলে আবেদন করার জন্য মনস্থির করুন।

  • সাবধানতা: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চাকরির খবরে যত বিজ্ঞাপন বা চাকরির অফার থাকে তার মধ্যে ভুয়া বা জাল চাকরির খবর ই বেশি। ভুইফোর হাজারো প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা চাকরি দেওয়ার নাম করে হাজারো মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে। এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। যেসব চাকরিদাতারা চাকরি দেওয়ার কথা বলে জামানত দাবি করে; তাদের এড়িয়ে চলুন৷


৫. পরিপাটি সিভি তৈরি করুন

এবার আপনার আসল প্রস্তুতির পালা। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সিভির গুরুত্ব কত সেটি নিয়ে অন্য এক লেখায় আলোচনা করেছি। আজকে আপনাকে এতটুকু নিশ্চিত করতে চাই, সিভি ই হলো আপনার মামা খালু অর্থাৎ একটি সুস্পষ্ট সিভি বা বেয়ো ডাটা ছাড়া চাকরি পাওয়া প্রায় অনিশ্চিত। নামি-দামি কোম্পানির নিয়োগদাতারা একটি সিভির মান চেক করেন। তারা যদি মনে করেন; সিভি বা বেয়ো ডাটাটি গুছানো এবং তাদের মনমতো হয় তবে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি কয়েক ধাপ এগিয়ে রইলেন।

  • যোগ্যতা: সিভি নিজ হাতে লেখার যোগ্যতা থাকতে হবে। অন্যকাউকে দিয়ে সিভি না লেখানোই উচিত৷ আপনাকে আপনার চেয়ে আর কেউ বেশি চিনেনা সুতরাং নিজের বেয়ো ডাটা নিজেই লিখুন। বায়ো ডাটা লেখার যোগ্যতা অর্জন ছাড়া ভুলেও চাকরির আশা করবেন না।

  • করণীয়: ঢাকা স্টাফের কথাই ধরুন। আমাদের কোম্পানিটি কি এমন কাউকে নিয়োগ দেবে যে কি'না নিজের বেয়ো ডাটা বা সিভি লিখতে পারেনা? অবশ্যই না। তদ্রুপ প্রায় প্রতিটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান চাকরিদানের ক্ষেত্রে এমন একজনকে বাছাই করবে যে কি না সিভি লিখতে পারে। সিভি লিখার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের এক্সপেরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতার লিস্ট টি যোগ করে দিবেন। কোন অভিজ্ঞতা না থাকলে; অবশ্যই সোশ্যাল ওয়ার্কের অভিজ্ঞতাগুলো সিভিতে শেয়ার করবেন। 


৬. ভাইভা বোর্ডে ফ্রেশ মুড আর কনফিডেন্ট থাকুন

ভাইভা বোর্ড হচ্ছে চাকরি পাওয়া না পাওয়ার নির্ধারণ করার টেবিল। এখানে নির্ধারণ হয় চাকরিটি পাবেন কি না। ভাইভা বোর্ডে আমরা অনেক সময় নার্ভাস হয়ে যাই; যা চাকরি না পাওয়ার প্রথম কারণ। একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, একজন মানুষ কখনো সবজান্তা হয়না অর্থাৎ ভাইভা বোর্ডে গিয়ে সব পারতে হবে এটি ভাবার কোন কারণ নাই। ভাইভা বোর্ডে আপনার কনফিডেন্ট লেভেলটা মুখ্য থাকে। ভাইভা বোর্ডে করণীয় নিয়ে, ঢাকা স্টাফে কলাম লিখা আছে। মোটকথা, ভাইভা বোর্ডে ফ্রেস মুড আর কনফিডেন্ট থাকাই চাকরি পাওয়ার মূল সুত্র।

  • যোগ্যতা: মানুষকে ডিল করার যোগ্যতা থাকতে হবে। কিভাবে অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলতে হয় সেগুলোর যোগ্যতা থাকতে হয়। বিনয়ী অথচ স্মার্টলি কিভাবে মানুষের সাথে কথা বলতে হয় এসবের যোগ্যতা নিয়ে আমরা দ্বিতীয় ধাপটি পড়ে আসছি৷ যোগ্যতা হিসেবে দুই একটি ভাইভা দেওয়ার অভিজ্ঞতাও জুরুরী।

  • করণীয়: ভাইভা বোর্ডে যাওয়ার দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে চা পান করতে পারেন। এক্সট্রা চাপ নেওয়া যাবেনা৷ যাস্ট কুল মাইন্ড নিয়ে দিন শুরু করুন। ভাইভা বোর্ডে কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পৌছানো আবশ্যিক দায়িত্ব। ভাইভা বোর্ডে অপেক্ষারত অবস্থায় হাসিখুশি থাকুন৷ ভাইভা বোর্ডের রুমে প্রবেশ করার সময় এবং বের হওয়ার সময় আদব রক্ষা করুন। চাকরিদাতা অর্থাৎ ভাইভা বোর্ডের কর্তাদের সাথে কনফিডেন্টলি কথা বলুন। কোন প্রশ্নের উত্তর না জানলে স্ট্রেইট সরি বলুন। ইনিয়ে বিনিয়ে অযুহাত দাড় করাবেন না।

৭. চাকরির জন্য অপেক্ষা না করে কিছু শুরু করুন

একমাত্র চাকরির জন্য অপেক্ষা করা বোকামি। গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির জন্যে হোক কিংবা জীবিকা নির্বাহের জন্য হোক- কিছু করুন৷ ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও ফুল, ফলের বাগান করতে পারেন। কোন কিছুই ছোট নয়।

বসে থাকলে আপনার উপর চাপ বাড়বে, জীবন নিয়ে হতাশায় ভুগবেন। চাকরি না পেলে ডিপ্রেশনে ভুগবেন। এসব ডিপ্রেশনে ভুগার পরিবর্তে বাসায় থেকে জব খোজার পাশাপাশি কিছু করুন।

জব চাই, জব চাই এসব পাগলামোর পাশাপাশি স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করুন। বাংলাদেশে যত বড় বড় চাকুরীজীবি আছে তাদের সকলের কোন না কোন বিজনেস অবশ্যই আছে। চাকরির পাশাপাশি অনেকেই খামার করছেন কেউবা মাছ চাষ করছেন আবার কেউ বা কৃষিকাজও করছেন।

আপনি যদি কেবল চাকরির পেছনে ঘুরে মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট করেন তবে সেটি অনেকটাই বোকামি। আজ থেকে চাকরির প্রস্তুতির পাশাপাশি বিকল্প চিন্তা করুন। আর চাকরির ক্ষেত্রে উপরের ধাপগুলো মেনে চলুন; চাকরিও হবে জীবিকাও চলবে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ