গত ১০ বছরের ব্যার্থতা কাটিয়ে তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিএনপির ভেতরে ভাইরে আলোচনা চলছে। দলের হাইকমান্ড থেকে শুরু করে নড়েচড়ে বসেছে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতারা। লন্ডনে অবস্থারনত তারেক রহমান সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে। যেকোন মূল্যে ইদের পর তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলা হবে, এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপির এক সিনিয়র নেতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানিয়েছেন, এবার যে করেই হোক দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতেই হবে। তিনি আরও জানান, লন্ডন থেকে তারেক রহমান সাংগঠনের সব কিছু তদারকি করছেন। যেসব নেতারা কার্যত কোন ভূমিকা পালন করতে পারছেন না তাদেরকে পদ থেকে সরিয়ে তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব বাছাই করতে জোর দিয়েছেন। এমতাবস্থায়, দলের মধ্যে বিশৃঙখলা তৈরী হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, তারেক জিয়া কঠোর নির্দেশ দিয়ে বলেছেন যারা বিশৃঙ্খলা তৈরীর চেষ্টা করবে তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, কিছু সিনিয়র নেতা তারেক রহমানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে চাইলেও বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কারণে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। দলের তৃণমূল থেকে সকল নেতাকর্মী তারেক রহমানের নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখায় দলের ভাঙন কিংবা বিশৃঙ্খলার তেমন সুযোগ নেই বলে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
বিষয়টি নিয়ে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা কতটুকু জানেন, জানতে চাইলে একজন কর্মী ঢাকা স্টাফকে বলেন এ ব্যাপারে তিনি শুধু শুনেছেন। নিজেকে বিএনপির রাজনীতিতে একজন সক্রিয় কর্মী জানিয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আন্দোলন করে দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে হবে, সেই সাথে তারেক রহমান যেন সগর্বে বাংলাদেশে পদার্পণ করতে পারে তার যথাযথ ব্যাবস্থা করতে হবে। ইদের পর আন্দোলনে আপনি অংশগ্রহণ করবেন কি না জানতে চাইলে ঢাকা স্টাফকে তিনি জানান, যদি কেউ আন্দোলনে অংশগ্রহণ নাও করে তবুও ইদের পর তিনি একাই আন্দোলনে অংশ নিবেন।
তারেক রহমানের নেতৃত্বের উপর আস্থা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেশনেতা তারেক রহমানের হাতেই।
আন্দোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এক নেতা জানান, আন্দোলন হবে। গত ১০ বছরের ব্যার্থতা গুছিয়ে এবার তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলার হুশিয়ারি দেন বিএনপির এ সিনিয়র নেতা। নাম না প্রকাশ করার শর্তে তিনি বলেন- এবার লিখে নেন, আন্দোলন এবার হবেই। দেশনেত্রীকে এবার মুক্ত করবোই ইনশাল্লাহ। আন্দোলনে কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও অনেকসময় নেতা খোজে পাওয়া যায় না, এবার তেমন টা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এবার সেসব নেতাদের সংগঠনের কোন পদে রাখা হবেনা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এবারের আন্দোলন সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম, এবার সবকিছু তারেক রহমানের নির্দেশে হচ্ছে। যারা পুলিশের ভয়ে আত্মগোপন করে তাদেরকে দলে যায়গা না দেওয়ার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান।
ইদের পর আন্দোলনে কতটুকু আশাবাদী জানতে চাইলে তিনি জানান, বিএনপির তৃণমূল থেকে হাইকমান্ড পর্যন্ত সকল স্তর এবার শতভাগ নিশ্চিত, এই আন্দোলনের মাধ্যমে রাতের ভোটে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে দেশমাতাকে কারাগার থেকে মুক্ত করবো।
জানা গেছে, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একাংশ যারা গত দশ বছরে দলের প্রয়োজনে আন্দোলন করতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছেন তাদেরকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। দলকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা অনেকটাই সম্পন্ন হয়েছে। জানতে চাইলে, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবেদ রহমান ঢাকা স্টাফের ইমেইলে জানান, তারেক রহমান এবার নেতাদের উপর গুরুদায়িত্ব দিয়ে দলকে পুনরায় ব্যার্থতায় ঠেলে দিতে চান না। যেকারণে এবার আন্দোলনের আগে তারেক রহমান নিজেই পুরো হোম ওয়ার্ক করে রেখেছেন। প্রত্যেকদিন তার বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন নেতাদের সাথে মনিটরিং করছেন। মি. আবেদ বলেন, তারেক রহমান এবার পুরোদস্তুর নেতার ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন সুতরাং এবার বিএনপি আশাবাদী, ইদের পর কিছু একটা দেশে হতে চলেছে। যারা পদ থেকে অব্যাহতি পাবেন তাদের দলে রাখা হবে কি না জানতে চাইলে আবেদ বলেন, এটি তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত তবে পদ থেকে অব্যাহতি পেলেও তাদের দলে রাখা হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ