খাদিজাকে কোপানোর পরও বদরুলের এখন পর্যন্ত কোন দৃশটান্তমূলক শাস্তি হয় নাই। ছাত্রলীগের বংশধর হওয়ায় বিশ্বজিতের হত্যাকারীরা খালাস পেয়ে গেছে। আশাকরা যায়, বরগুনার রিফাত হত্যাকান্ডের বিচারটুকুও আড়ালে আবডালে হারিয়ে যাবে। এজন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে পড়তে পারেন মাশআল্লাহ।
এত এত তথ্য প্রমাণ আর ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও বিশ্বজিতের খুনীরা খালাস পায় এদেশে! দিবালোকের মত তথ্য প্রমাণ থাকলেও বিচারের নামে বছরের পর বছর প্রহসন চলে! দিনশেষে চাপাতিবাজরা খালাস পেয়ে দাত খিলখিল করে আদালত পাড়া ত্যাগ করে।
সেদিন বদরুলের বিচার হলে আজ রিফাত চাপাতির নিচে পড়তো না। সেদিন বিশ্বজিতের খুনীরা খালাস না পেলে হয়তো রিফাত বেচে যেতো। প্রত্যক্ষ না হোক, পরোক্ষভাবে রিফাতের খুনী আমাদের বিচার বিভাগ।
নুসরাত হত্যাকান্ড আজ প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল। বিচার কতটুকু এগিয়েছে তা প্রায় সবারই জানা। ওসি মোয়াজ্জেম সানগ্লাস পড়ে আদালতে উপস্থিত হয়ে আমাদের এটুকু জানান দিয়েছেন, তার কিছু হচ্ছে না। সে মামলার প্রধান আসামী সিরাজউদ্দৌলার হাসিগুলো কিঞ্চিৎ প্রমাণ করে: বিচার বিভাগে আস্থা আছে তার! এত এত অকাট্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও নুসরাতের বিচার হতে কয়েক বছর লেগে যাবে। আর এর মধ্যে নতুন আরেক নুসরাতকে পুড়িয়ে মারা হবে।
বাংলাদেশের তিন বিভাগের সবগুলো বিভাগই দুর্বল ও ভঙ্গুর৷ এর মধ্যে বিচার বিভাগ ভঙ্গুর এবং সেই সাথে মারাত্মক ধীর। সাংবিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিভাগটি সরকার থেকে আলাদা হলেও বাস্তবে তা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং সরকারের ইচ্ছাধীন পরিচালিত। যেকারণে ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামীলীগের জন্য বিশেষ আইন এবং এর বাইরে অন্যান্যদের জন্য আরেক আইন।
মামলার এক বছরে রায় পেয়েছেন এবং সে রায়টি কার্যকর করা হয়েছে এমন ব্যাক্তি বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল এবং নেই বলেই জানা যায়। বরং একটি মামলার রায় হতে এই দেশে বিশ ত্রিশ বছর লাগারও ইতিহাস আছে।
এরকম সরকার নিয়ন্ত্রিত, ধীরস্থির বিচার বিভাগের কাছে নুসরাত, বিশ্বজিত আর রিফাত হত্যাকান্ডের বিচার চাওয়াটা বোকামী কারণ এদের হত্যাকারী তো এ বিচার বিভাগই।
কোন দেশের বিচারব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে সে দেশে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়। আমাদের দেশেও অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে যা ইউনিভার্সাল ট্রুথ এবং খুবই স্বাভাবিক। রিফাতের বিচার চেয়ে এই স্বাভাবিক ব্যাপারটাকে অস্বাভাবিক করার করুণ ইচ্ছা না করাই মঙল। আমরা এমন এক দেশে বাস করি, যে দেশে বিচার চাইতেও লজ্জা লাগে এখন।
চোখে ভেসে উঠে, কয়দিন পর রিফাতের খুনীরা ভি দেখিয়ে খিল খিল করে আদালত ছেড়ে যাচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ