খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে দর কষাকষি : কে জিতবে সরকার নাকি বিএনপি?

খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে দর কষাকষি : কে জিতবে সরকার নাকি বিএনপি?

 
www.dhakastaff.com
বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের ভেতরে বাইরে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে দর কষাকষি চলছে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বিএনপিকে সরকার কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শর্তগুলোর মধ্যে প্রথম ও প্রধান যে শর্তটি পাওয়া গেছে তা হলো, গত নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীরা সংসদে যোগ দিলে আওয়ামীলীগ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে পারে। এছাড়াও যে শর্তগুলো বিএনপিকে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে, বেগম জিয়াকে প্যারোলে মুক্ত করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা এবং আগামী পাচ বছরে কোন ধরনের আন্দোলন না করার শর্ত প্রধান।

প্যারোলে মুক্তি কিংবা শর্ত জুড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে মাসুদুর রহমান জানান, যদিও শর্ত জুড়ে দেওয়া কিংবা প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে সরকার কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে তেমন কোন স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না তবে এরকম কিছু ঘটনা যে ভেতরে বাইরে ঘটতে পারে তা অনুমেয়। তিনি যোগ করেন, বিএনপির জন্য আগামীর রাজনীতি যে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে "প্যারোলে মুক্তি"র শর্ত নিয়ে তা প্রায় অনেকটা নিশ্চিত।

শেখ হাসিনা স্বৈরশাসক কি না জানতে পড়ুন : শেখ হাসিনা সরকার কি স্বৈরশাসকে পরিণত হচ্ছে?

যদি এরকম শর্ত বিএনপিকে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় তবে এর ফলাফল কি দাঁড়াবে কিংবা বিএনপি কি করবে জানতে চাইলে মি. মাসুদ জানান, এরকম শর্ত বিএনপিকে দেওয়া হলে বিএনপি দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। প্রথমত, বিএনপির দলীয় কিছু নেতাকর্মী নিজেদের সুবিধার কথা ভেবে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাইবে। দ্বিতীয়ত, যারা বিএনপিকে ভবিষ্যতে টিকিয়ে রাখতে চায় এসব ত্যাগী নেতারা কখনোই খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাইবে না। প্রথমপক্ষ, যারা খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি চাইবে তারা সাধারণত একটা বিষয় সম্পর্কে অবগত যে, যদি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। দ্বিতীয়পক্ষের বেলায় এটি ঠিক উলটো বলে জানান মি. মাসুদ।

শেষ পর্যন্ত বিএনপি নেত্রী প্যারোলে মুক্তি নিবেন কি না জানতে চাইলে মি. মাসুদ জানান, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার দীর্ঘ আন্দোলনের ফলেই এতদূর আসতে পেরেছেন। সুতরাং তিনি এত সহজেই প্যারোলে মুক্তি নিবেন না তবে যদি শারীরিক অসুস্থতার কারণে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে কিংবা পরিবারের বিশ্বস্ত কাউকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখেন তবে সেক্ষেত্রে তিনি সেটি নিতে পারেন বলেও জানান মি. মাসুদ।

সুবিধাবাদী নেতাকর্মীরা এ মুহুর্তে কোন ধরণের প্রভাব খাটাতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, যতটুকু প্রভাব খাটানো যায় তার অধিকাংশই ইতোমধ্যে তারা খাটিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, সুবিধাবাদীরা সবসময় এরকম সুবিধার জন্যই অপেক্ষা করে।

আওয়ামীলীগের ভবিষ্যত রাজনীতি একনায়কতন্ত্রে পরিণত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে মি. মাসুদ জানান, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কখনোই বহুনায়কতন্ত্র ছিল না। সবসময় একনায়কতন্ত্রই এদেশে উদাহরণ।


বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিএনপির করণীয় কি জানতে চাইলে মি. মাসুদ জানান, প্যারোলে মুক্তি না নেয়াই বিএনপির প্রথম করণীয়।  দ্বিতীয় করণীয় হচ্ছে যেভাবেই হোক রাস্তায় আন্দোলন গড়ে তুলা। টিভি আর ফেসবুকের আন্দোলন বাদ দিয়ে জনপদে বের হয়ে আসলেই কেবল বিএনপি তাদের নেত্রীকে কারামুক্ত করতে পারবে নতুবা সুবিধাবাদীদের দাবাচালে যেকোন সময় বিপর্যয়ে পড়তে পারে বিএনপি।

বিএনপির কর্মী সমর্থকদের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মি. মাসুদ জানান, নেতাকর্মীদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি নেত্রীকে যেন প্যারোলে মুক্তি দেওয়া না হয় তা নিয়ে যেমন সতর্ক থাকতে হবে তেমনি সমর্থকদের জানাতে হবে যে, প্যারোলে মুক্তি নিলে বিএনপি ভাঙ্গনের মুখে পড়তে পারে। কারো প্ররোচনায় যেন বিএনপি এ ভুলটি না করে তা নিয়ে সবসময় সজাগ থাকতে বলেন তিনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ