এক সময় ডাইনোসরদের প্রভাব পৃথিবীতে প্রচুর পরিমাণে ছিল। যখন পৃথিবীতে ডাইনোসরদের বসবাস ছিল তখন মানুষের কোন অস্তিত্ব ছিল না। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষদের পূর্বে জিনদের বসবাসের কথা থাকলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন ভিন্ন কথা। বিজ্ঞানীরা ডাইনোসর তত্ত্বেই বিশ্বাসী। বিজ্ঞানীদের আবার আরেকটা তত্ত্ব আছে সেটি হলো "বিজ্ঞান তত্ত্ব"। তত্ত্বটি এমন যে, ধর্মের সাথে বিজ্ঞান মেলাতে নেই। ঠিক আছে, মিল আর অমিল বাদ ই দিলাম। প্রকৃত কথা হলো, ডাইনোসর কিংবা জিন যাই হোক না কেন তারা পৃথিবী থেকে ধ্বংস হয়ে গেছে। নিজেদের মধ্যে বিবাদ আর হানাহানির কারণে ডাইনোসরদের অস্তিত্ব শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি। নিজেদের মধ্যে হানাহানি, সংঘর্ষ আর বিবাদের কারণে সেই সময়কার বুদ্ধিমান প্রাণীটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
বর্তমান সম্প্রদায়ের মানুষগুলোও একইভাবে হানাহানি আর বিবাদে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। হয়তো এরাও একদিন নিজেদের হানাহানির কারণেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
পৃথিবীর মধ্যে এত এত সম্প্রদায়। এক সম্প্রদায়ের সাথে অন্য সম্প্রদায়গুলোর বিবাদ ফ্যাসাদ তো আছেই সেইসাথে নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিবাদ ফ্যাসাদে পরিপূর্ণ। নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে আবার গ্রুপিং ও আছে। এই গ্রুপগুলো একটি আরেকটিকে দেখতে পারেনা। এই গ্রুপগুলোর মধ্যেও আবার অন্তগ্রুপিং আছে। প্রত্যেকটি অন্তগ্রুপের মানুষগুলোর মধ্যেই ডাইনোসর ভর করেছে।
চলুন একটু জেনে নেই, বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের মধ্যে কতটা ভয়ংকর ডাইনোসর ভর করেছে। সেই সাথে আওয়ামিলীগ কতটা ডাইনোসরের রুপ নিয়েছে তা জানাটাও বোধহয় মন্দ নয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার একটি বিরাট অংশ অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করে। অস্বাভাবিক বলতে, মানুষ প্রকৃতির কারণেই মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য কিন্তু একজন মানুষ যখন অন্যকোন মানুষের আক্রমণ কিংবা হানাহানির ফলাফলসরুপ মারা যায় সেটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। এই অস্বাভাবিক মৃত্যুহার সকল দেশেই প্রচন্ডরকম বৃদ্ধি পেয়েছে, বাংলাদেশে এ হার তুলনামূলকভাবে এতটাই বেশি যে, যা রীতিমতো ডাইনোসরদের শেষ দিকের ভয়ানক বিশৃঙ্খলা নির্দেশ করে।
বাংলাদেশ আওয়ামিলীগে ডাইনোসরের ছায়া:
প্রত্যেকদিন কাগজে শিরোনাম হয়, অমুক জেলায় অন্তঃকোন্দলে আওয়ামিলীগ নেতা আহত, মাঝে মাঝে নিহত বলেও খবর পাওয়া যায়। আওয়ামিলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা কিংবা আওয়ামিলীগের অমুক নেতা ধর্ষণ মামলার আসামী এমন খবরও পাওয়া যায় অসংখ্য। এবার একটু ভাবুন তো, এসব অন্তঃকোন্দল অনেকটাই নিজেদের মধ্যে ফ্যাসাদ আর বিবাদের মত লাগে কি না? একটি মানুষ হয়ে আরেকটি মানুষকে হত্যা করা কিংবা আহত করা বিলুপ্ত ডাইনোসরদের প্রভাব নয় কি? অমুক ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণ মামলার আসামী। কাকে ধর্ষণ করছে এসব শ্রেষ্ঠ অথচ নিম্ন শ্রেণীর প্রাণীরা? ধর্মের কথা না হয় তুলেই রাখলাম, বিজ্ঞান তো বলে কেবল এসবের কারণেই ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল আরও কোটি বছর আগে।
প্রায় দীর্ঘ সাড়ে ১০ বছর হতে চলল একটানা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়। এই গত সাড়ে ১০ বছরে আওয়ামীলীগ যতটা উন্নতি করেছে ঠিক সমানতালে বাড়িয়েছে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি। এই অপরাদগুলো পুর্বে ভিন্ন দল আর গোত্রের মধ্যে করতো আওয়ামিলীগ আর তার অঙ্গসংগঠনরা কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, এখন নিজেদের মধ্যেই সংঘটিত হচ্ছে। ভিন্ন দলের উপর যখন এরা নির্যাতন আর অত্যাচার চালাতো তখন এরা ছিল ডাইনোসরের ছোট অবস্থা আর যখনই এরা নিজেদের মধ্যে অপরাদ করতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই এরা বড় ডাইনোসরদের রুপ ধারণ শুরু করেছে। এখন তিল তিল করে বিশৃঙ্খলার পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিজেদের মধ্যকার কোন্দল আর হানাহানির কারণে আওয়ামিলীগ একদিন দুমড়ে মুচড়ে পড়বে যদি না তাদের এসব ডাইনোসরী অভ্যাস দল থেকে বিতাড়িত না হয়।
ডাইনোসরদের ধ্বংসের ইতিহাস তাদের অন্তঃদ্বন্দ থেকেই শুরু হয়েছিল এবং তাদের শেষটা ছিল নিঃশেষ হওয়ার। যদিও বর্তমান পৃথিবীর মানুষগুলো ডাইনোসরদের পরিনামই ভোগ করতে যাচ্ছে তবে সেটি কালক্ষেপণ করা যায় সামান্যতম চেষ্টার মাধ্যমেই। আওয়ামিলীগ যদি নিজেদের বর্তমান চরিত্র থেকে বেড়িয়ে আসে তবে তাদের সেই ডাইনোসর পতন ঠেকানোটা এখনো সম্ভব।
তনুর মতো হত্যাকান্ডের বিচারগুলো যদি আওয়ামীলীগ করে দিতে না পারে তবে এই আওয়ামিলীগ অবশ্যই ডাইনোসরদের নতুন ছায়া বলেই বিবেচিত হবে, দরকার শুধু সময়ের।