এসএসসি রেজাল্ট ও এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে?

এসএসসি রেজাল্ট ও এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে?

করোনার কারণে সবথেকে বেশি মানসিক যন্ত্রণায় আছেন সম্ভবত এদেশের ২০২০ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। এসএসসি পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে পরীক্ষা শেষ করতে পারলেও রেজাল্ট কবে নাগাদ হবে তা নিয়ে আশার কোন আলো দেখছেন না। এদিকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আছেন ঘোরতর অনিশ্চয়তায়; পরীক্ষা কবে নাগাদ শুরু হবে তার কোন হদীস পাচ্ছেন না তারা। করোনাভাইরাসের কারণে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রায় দিশেহারা বাংলাদেশের ২০২০ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। অনিশ্চয়তা দানা বাঁধছে এ বছরের জেএসসি পরীক্ষার্থীদেরও!

এসএসসি রেজাল্ট কবে দিবে?

www.dhakastaff.com

প্রশ্নটি প্রায় ঘুরেফিরে বারবার আসছে। গতবছর এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট শিক্ষার্থীরা পেয়েছিল মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই কিন্তু এবার সেটি হয়নি। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ ছুটি ধাপে ধাপে বাড়ানোর কারণে পরীক্ষা-পরবর্তী রেজাল্ট প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটে; ফলে এ বছর শিক্ষার্থীরা যে সময়মতো রেজাল্ট পাচ্ছে না তা প্রায় অনুমেয় ছিল। অভিভাবক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের একটি বিরাট অংশ রেজাল্টের এই অনিশ্চয়তায় মানসিক চাপে আছেন বলে জানা গেছে। 

কবে হতে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা ২০২০ এর রেজাল্ট? কবে নাগাদ এসব পরীক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে কলেজে যাবেন? আপাতদৃষ্টিতে করোনাভাইরাস থেকে বাংলাদেশকে উত্তোরণের জন্য কমপক্ষে আরও দুয়েক মাস লাগতে পারে; যদিও দুয়েক মাসের মধ্যে করোনা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ তবুও দুয়েক মাস পর করোনার প্রভাব স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশাবাদী। করোনার স্থিতিশীলতায় সরকার সাধারণ ছুটি থেকে সরে আসবে ফলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন ও রেজাল্ট প্রণয়নসহ সকল কর্মযজ্ঞ অল্প সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সরকার কয়েকধাপে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সর্বশেষ সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হবে মে মাসের ৩০ তারিখ। আশা করা হচ্ছে, উক্ত ছুটি আর বর্ধিত করা হবে না; ফলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন এবং রেজাল্ট প্রণয়ন অতিদ্রুতই শুরু হতে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে; উক্ত তারিখের এক মাসের মধ্যেই এসএসসি পরীক্ষা ২০২০ এর রেজাল্ট প্রকাশ করতে পারবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রেজাল্ট পরবর্তী অল্প সময়ের মধ্যেই কলেজগুলো উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং আগস্ট সেপ্টেম্বর নাগাদ উচ্চমাধ্যমিকের ক্লাস শুরু হবে বলে আশা করা যায়।

এইচএসসি পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে?

শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে থাকা '২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পেন্ডুলামের মত দুলছেন তাদের পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে৷ কবে নাগাদ এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে যেমন চিন্তিত তেমনি ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় সামনে থাকায় চিন্তার পাল্লাটা ভারী হয়ে পড়েছে বহুগুণ। এক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নির্ভর করছে করোনার প্রাদুর্ভাব স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌছাতে প্রয়োজনীয় সময়ের উপর। আশা করা যায়; কুরবানি ঈদের পূর্বেই সম্পন্ন হবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা। এক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার সময়টা হতে পারে জুনের শেষ দিকে। পূর্বঘোষিত সরকারি সাধারণ ছুটি যদি ৩০ই মে পর্যন্ত কার্যকর হয়ে আর বর্ধিত করা না হয় তবেই জুনের শেষদিকে শুরু হতে পারে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা। আর যদি পুনরায় সাধারণ ছুটি বর্ধিত করা হয় তবে আগস্ট পরবর্তী যেকোন সময় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে; সেক্ষেত্রে রেজাল্ট প্রকাশ পেতে পেতে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির প্রথমেই ভর্তি পরীক্ষা সংঘটিত হয়ে সামগ্রিক ভর্তি সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারী-মার্চেই নতুন একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। 

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সবাইকে পাস করিয়ে দেওয়া হবে

করোনাভাইরাসের সাথে পাল্লা দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে গুজব। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন না করে সবাইকে গড়পড়তা পাশ করিয়ে দেওয়া হবে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর; এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও গুজব ছড়ায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। গুজবে পড়ে অনেকেই যেমন চিন্তায় ভেঙে পড়ছেন তেমনি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অনেকেই পড়ালেখায় ঢিলেমো শুরু করেছেন। সকল পরিক্ষার্থীদের এতটুকু মনে রাখা উচিত যে; যথাযথ নিয়মে এসএসসি রেজাল্ট প্রকাশিত হবে এমনকি এইচএসসি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং গুজবে কর্ণপাত না করে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকা কর্তব্য।

ঝুঁকিতে জেএসসি পরীক্ষার্থীরাও:

প্রতি বছর জেএসসি পরীক্ষা সাধারণত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হলেও এবার নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। মূলত জেএসসি পরীক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিকের জন্য মোট দশ মাস সময় পেয়ে থাকেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ মাসের ১৭ তারিখ থেকে সকল স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের একাডেমিক কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কবে নাগাদ সচল হচ্ছে তা অনিশ্চিত৷ সব মিলিয়ে কুরবানির আগে স্কুল কলেজ খোলা না গেলে জেএসসি পরীক্ষার্থীদের সিলেবাস সম্পন্ন করা অনেকটাই অসাধ্য হয়ে পড়বে৷ সেক্ষেত্রে নভেম্বরে জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত। তবে সকল জেএসসি পরীক্ষার্থীদের উচিত হবে নভেম্বর মাথায় রেখে নিয়মিত পড়ালেখা করা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ