শেয়ার বাজার কি এবং শেয়ার কেনার আগে যা জানা দরকার

শেয়ার বাজার কি এবং শেয়ার কেনার আগে যা জানা দরকার

www.dhakastaff.com

বাংলাদেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ আছে। একটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপরটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। বাংলাদেশের অর্থনীতির উঠানামা এই দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ এই হয়। শেয়ার কেনাবেচা থেকে শুরু করে সকল তথ্যই পাওয়া যায় এই দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ এ। শেয়ার বাজার বা শেয়ার মার্কেট নিয়ে যাদের প্রচুর আগ্রহ তারা অবশ্যই এই দুটি স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট প্রথমেই দেখে আসবেন তারপর ঢাকা স্টাফের এই কলামে ঢু মারবেন। তো চলুন জেনে নেয়া যাক, শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু ধারনা।

শেয়ার মার্কেট কি:

একটি কোম্পানি মূলধন কালেকশন করার জন্য তার কোম্পানির কিছু অংশ সাধারণ মানুষদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় অর্থাৎ যে কেউ চাইলে অর্থ দিয়ে সে কোম্পানির অংশীদার হতে পারে(শর্ত প্রযোজ্য)। নির্দিষ্ট অংশীদারিত্বের ফলে ঐ কোম্পানির লাভ বা লোকসানের ভাগিদার হোন যে ব্যাক্তি অংশীদার সেই ব্যাক্তি। মূলধন যোগানার্থে অর্থ দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমান অংশ কিনে নেওয়াকেই সাধারণত শেয়ার কেনা বলে এবং এসকল পুরো ব্যাপারটি ই হলো শেয়ার মার্কেট। শেয়ার মার্কেটে যেকোন পরিমান অর্থ নিয়ে প্রবেশ করা যায় তবে বুদ্ধিমান না হলে শেয়ার মার্কেটে টিকে থাকা আপনার জন্য যথেষ্ট কঠিন।

শেয়ার কিভাবে কিনবো?

শেয়ার কেনার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে। শেয়ার কেনার জন্য আগ্রহী হলে এসব প্রতিষ্ঠানে আপনাকে যেতে হবে। যেসকল প্রতিষ্ঠান শেয়ার বিক্রি করে তাদেরকে ব্রোকার হাউজ বলে। আপনি চাইলে যেকোন ব্রোকার হাউজ থেকে শেয়ার কিনতে পারবেন। অনলাইনেও এখন ব্রোকার হাউজরা সেবা দিয়ে থাকে তবে শেয়ার কেনার আগে অবশ্যই ব্রোকারদের সম্পর্কে পজিটিভি রিভিউ নিয়ে যেতে হবে। যেকোন প্রকার শেয়ার বিক্রেতার কাছে না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংকের নিজস্ব ব্রোকার হাউজ আছে চাইলে এই ব্যাংকগুলোর ব্রোকার হাউজে যেতে পারেন।
ব্রোকার হাউজে গেলেই যে আপনি শেয়ার কিনতে পারবেন ব্যাপারটা তাও না। সেখানে গেলে আপনাকে প্রথম যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো- একটি বিও একাউন্ট খুলতে হবে। বিও একাউন্ট আবার কি? এটার পূর্ণরুপ হলো, বেনিফিসিয়ারি ওপেন একাউন্ট অর্থাৎ আপনি শেয়ার কেনার পর লাভ ক্ষতির যাবতীয় হিসাব নিকাশ আপনার এই বিও একাউন্টে জমা হবে। ভাবছেন- আজই ব্রোকার হাউজে গিয়ে বিও খোলে শেয়ার কিনে ফেলবেন? তার আগে অবশ্যই আপনাকে কিছু সতর্কতামূলক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

শেয়ার কেনার আগে করণীয়:

শেয়ার কেনার আগে আপনাকে অবশ্যই যে কোম্পানির শেয়ার কিনবেন তার আদ্যোপান্ত জেনে নিতে হবে নচেৎ টাকাগুলো মাটি ছাড়া স্বর্ণ হবেনা। কোম্পানির ডিটেলস জানার পর অবশ্যই ঐ কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। ভবিষ্যতে এসব প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়া বা কমার ঝুকি কতটুকু সেটা নিয়ে রাতদিন একটু গবেষণা করবেন। বিগত কয়েক মাসের শেয়ার রিসার্চ করবেন। এবার এতকিছু ভাবার পরও ভবিষ্যতের কথা ভেবে দেখুন। আন্তর্জাতিক মানের কোম্পানি হলে বিশ্বের অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়তি নাকি কমতির দিকে সেটি নিয়ে গবেষণা করুন। এতকিছু করার পর যদি মনে হয়, আপনার শেয়ারকৃত কোম্পানিটির সম্ভাবনা সামনের দিকে তবেই শেয়ার কিনুন নচেৎ সেই কোম্পানির শেয়ার কেনা থেকে লেজ না নেড়ে পালিয়ে যান।

স্টক এক্সচেঞ্জে ঝুঁকি এড়াতে যা করবেন:

সকল ব্যবসার মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ বা শেয়ার মার্কেট ব্যবসাটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এত হিসাব নিকাশ করার পরও দেখবেন- দিনশেষে ফকির হয়ে গেছেন(আল্লাহ না করুক)। সকল ব্যবসাতেই ঝুঁকি আছে তবে অবশ্যই যে ব্যবসায় যত ঝুঁকি সে ব্যবসায় তত সফলতা থাকে। ঝুঁকি এড়াতে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন।
  • ছোট ছোট শেয়ার কেনা থেকে শুরু করুন।
  • এক কোম্পানির অধিক শেয়ার না কিনে ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির অনেকগুলো শেয়ার কিনুন।
  • নিজের মূলধনের সবটা শেয়ার বাজারে আনবেন না।
  • কারও কথায় কর্ণপাত করে শেয়ার কিনবেন না। নিজের বুদ্ধি না থাকলে এই মার্কেটে আসার ই দরকার নাই।
  • দুনিয়া আর বাজার সম্পর্কে পড়ালেখা বাড়িয়ে দিন তারপর মার্কেটে আসুন।

শেয়ার বাজারে বাংলাদেশ নিরাপদ কি না:

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল তবে কতিপয় লোকের কাছে বাংলাদেশের অর্থনীতি জিম্মি হয়ে আছে ফলে আপনার শেয়ার সম্পর্কে কোন ভবিষ্যতবাণী দেওয়া যাচ্ছে না তবে অন্যান্য দেশে লোকসানের যে ঝুকি থাকে বাংলাদেশে সেটি অনেকাংশে কম। আবার লোকসানের প্রভাব যেহেতু কম সেহেতু লাভের পাল্লাটাও কম। আগামী তিন চার বছরের মধ্যে তেমন ঝুঁকি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এ ঘটার সম্ভাবনা কম তবে উঠানামা হঠাৎ হঠাৎ করে হচ্ছে ফলে কি হবে তা অনুমান করা অত্যাধিক কঠিন।

এরপর ভেবে দেখার পালা আপনার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ