অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন যেভাবে : ই-টিকেট বিডি

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন যেভাবে : ই-টিকেট বিডি

আরও বহু আগে থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়ে তাদের টিকেট কাউন্টার ইন্টারনেটে স্থাপন করে দিয়েছে। শুধু ইন্টারনেট নয়, মোবাইলের এসএমএসেও স্থাপন করে দিয়েছে ভার্চুয়াল টিকেট কাউন্টার। আমরা অনেকেই এটি জানি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকেট কাটা যায়, মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে টিকিট কাটা যায় ইত্যাদি কিন্তু কিভাবে কাটতে হয় তা অধিকাংশ ই জানিনা। ঢাকা স্টাফের প্রযুক্তি কলামে আজকে ছাপা হলো, কিভাবে ট্রেনের টিকিট কাটতে হয় তার পদ্ধতি।

শুরুতেই আপনার একটি ইন্টারনেট সংযোগ সম্পন্ন কম্পিউটার কিংবা মোবাইল থাকতে হবে যেটি দিয়ে আপনি টিকেট ক্রয় করবেন। প্রথমবার আপনি এ কাজটি করতে গেলে আপনাকে অতিরিক্ত কিছু কাজ করতে হবে যেমন, রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে এবং সেই সাথে আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংযুক্ত করতে হবে। পরবর্তীতে অবশ্য এ কাজগুলো পুনরায় আপনাকে করতে হবে না, সেক্ষেত্রে তখন কেবল লগ ইন করে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।
তো, রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য ভোটার আইডি কার্ডটি সাথে রাখুন।

এবার, বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা www.esheba.cnsbd.com
এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। প্রবেশ করার ক্ষেত্রে যেকোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন তবে গুগল ক্রোম দিয়ে ব্রাউজ করাটাই সবচাইতে শ্রেয় বলে মনে হয়। এই ব্রাউজার বিশেষ নিরাপদ এবং যেহেতু এখানে আপনারা নিজেদের পার্সোনাল তথ্য প্রদান করবেন সেক্ষেত্রে নিজেকে সেইফ জোনে রাখাটাই শ্রেয়।



এবার ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর উপরের ছবির মত বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইটটি দেখতে পাবেন। ওয়েবসাইটটির ডান দিকে মাঝামাঝি জায়গায় সাইন ইন করার অপশন দেখতে পাবেন। যেহেতু আপনি এখনো রেজিষ্ট্রেশন করেন নি, সেহেতু প্রথমেই আপনাকে রেজিষ্ট্রেশন করে নিতে হবে। এজন্য আপনাকে সাইন ইন এর নিচেই "সাইন আপ" নামক একটি অপশন আছে সেটিতে ক্লিক করতে হবে। এবার যে রকম পেজটি দেখতে পাবেন তার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হলো।



এই পেজে যাবতীয় তথ্য পূরণ করে আইডেন্টিফিকেশন নাম্বারের জায়গায় নিজের ভোটার আইডির নাম্বারটি বসান। যদি নিজের ভোটার আইডি না থাকে তবে সেখানে আপনার জন্ম সনদের নাম্বার বসাতে হবে। আর জন্ম সনদ না থাকলে আপনি কোনভাবেই টিকেট ক্রয় করতে পারবেন না। মনে রাখতে হবে, কোনভাবেই এখানে মিথ্যা তথ্য দেওয়া যাবে না।
সকল তথ্যপূরণ করা হয়ে গেলে, নিচের দিকে রেজিষ্ট্রেশন বাটন আছে সেখানে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনি যে ইমেইল নাম্বারটি এখানে দিয়েছেন, সেটিতে একটি কনফার্মেশন মেসেজ চলে যাবে। এবার আপনি আপনার ইমেইলে গিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাঠানো মেসেজটিতে প্রবেশ করুন। দেখবেন, একটি লিংক পাঠানো হয়েছে। এবার সেই লিংকে ক্লিক করলেই আপনার ভেরিফিকেশন কম্পলিট দেখাবে।
এবার পুর্বের ন্যায় সাইন ইন পেজে চলে যান।
সাইন ইন পেজে গিয়ে, যে ইমেইলে একাউন্ট খোলেছেন সেটি, পাসওয়ার্ড এবং সিকিউরিটি কোড ফিল আপ করে সাইন ইন বাটন চাপুন।

এবার আপনার সাইন-ইনকৃত পেজটি দেখাবে। পেজটি দেখতে যেমন হবে তার একটি নমুনা নিচে দেওয়া হল।



পরবর্তীতে যখন ই টিকেট ক্রয় করবেন তখন শুধু সাইন ইন করে এই পেজে চলে আসবেন। এবার আপনার টিকেট কাটার পালা।
ওয়েবসাইটের উপরের দিকে তাকালেই কয়েকটি অপশন দেখতে পাবেন। ফেয়ার কোয়েরি, ট্রেইন রুট, পার্সেস টিকেট ইত্যাদি। টিকেট ক্রয়ের জন্য আপনাকে পার্সেস টিকেট অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর নিচের ফটোর মত একটি পেজ দেখতে পাবেন।




এখান থেকে কোন স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করবেন, কত তারিখ, কোথায় যাবেন এবং সিট কোন ধরনের হবে তা সিলেক্ট করতে হবে। এবার সিলেক্ট করার পর সার্চ ট্রেইন বাটনে চাপতে হবে। এবার আপনার তারিখ গন্তব্য অনুযায়ী কোন ট্রেন আছে কিনা তা দেখাবে। এবার এখান থেকে কয়টি আসনের টিকেট ক্রয় করবেন তা সিলেক্ট করতে হবে। এরজন্য আপনার পছন্দের ট্রেনের লাইনে দেখবেন, এডাল্ট এর নিচে খালিঘর দেওয়া আছে। সেখানে আপনার প্রয়োজনীয় সিট সংখ্যা সিলেক্ট করতে হবে। একজন ব্যবহারকারী সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।



এবার সিট সংখ্যা সিলেক্ট করা হয়ে গেলে, পাশেই দুটি অপশন দেখতে পাবেন। একটি অটো সিলেকশন আরেকটি ম্যানুয়ালি।  দুটি অপশন আলাদা আলাদা কারনে ব্যবহার করা হয়ে। ম্যানুয়ালি অপশনটা আপনার ইচ্ছানুযায়ী সিট প্ল্যানের ক্ষেত্রে আর অটো সিলেকশন টা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির জন্য। এবার অটো সিলেকশন বাটনে ক্লিক করুন। যদি আপনার বাছাইকৃত ট্রেনের সিট ফাকা থাকে তাহলে রিকুয়েস্টেড সিট এভেইলেবেল নামক একটি অপশন আসবে। তার নিচেই ভাড়া পরিশোধের অপশন থাকবে।



পছন্দমত অপশনে ক্লিক করে ভাড়া পরিশোধ করলেই, আপনার ইমেইলে একটি ই-টিকেট পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেটির একটি হার্ড কপি পরবর্তীতে সঙ্গে নিয়ে আসলেই প্লাটফর্মের টিকিট কাউন্টার থেকে আপনার টিকেটটি বুঝে নিতে পারবেন, আপনি চাইলে সেই হার্ডকপির মাধ্যমেও ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন।
আপনার ট্রেন ভ্রমন সুন্দর হোক।