দিনের পর দিন রাস্তাঘাট হচ্ছে, ব্রীজ হচ্ছে। রাস্তার পাশে সুন্দর সুন্দর যাত্রী ছাউনি হচ্ছে, রাস্তা পারাপারের জন্য জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ কতটা হচ্ছে?
জেব্রা ক্রসিং কি এবং কেন দেওয়া হয় ড্রাইভাররা সেটা জানেন না। ড্রাইভাররা এটাও জানেন না, গতিসীমা কি! যে রাস্তায় ৪০ কিমি প্রতি ঘন্টা বেগ বেধে দেওয়া সেখানে ড্রাইবাররা ৬০/৭০ এ চালাচ্ছেন।
দুটি বাসের মধ্যে যখন প্রতিযোগিতা চলে তখন আমাদের ট্রাফিক পুলিশরা বুঝে উঠতে পারেন না যে, গাড়ী দুটির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে।
রাস্তার উন্নয়ন বাদ দিয়ে আগে আমাদের এসবের উন্নয়ন হওয়া উচিৎ, তাহলেই প্রকৃত উন্নয়নের স্বাদ আমরা পেতে পারবো।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় অহরহ। যেগুলো চকচক করছে এসবের মধ্যে অধিকাংশ ই ফিটনেসবিহীন। উপরে রঙ লাগিয়ে চকচকে বানানো হয়, আদতে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় অধিকাংশ। এসবের প্রতিকার না হলে রাস্তায় দুর্ঘটনা বন্ধ হবে না। প্রকৃত উন্নয়নের স্বাদ আমরা পাবো না।
একই সাথে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। ফুটওভার ব্রিজ রেখে আমরা নিচ দিয়ে রাস্তা পার হতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি। রাস্তা পার হওয়ার সময় মোবাইলের স্ক্রীনে তাকিয়ে থাকি। এসব কারনেও দুর্ঘটনা হয়।
দুর্ঘটনার জন্য কেবল চালককে দায়ী করাটাও একরকম অন্যায়। আমরা সচেতন না হলে পুরোপুরি দুর্ঘটনা বন্ধ করা কখনোই সম্ভব নয়।
বর্তমানে উন্নয়ন বলতে সরকার এটাই বুঝাতে চায় যে, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট ইত্যাদি হচ্ছে কিন্তু প্রকৃত উন্নয়ন বলতে যা বুঝায় সেটি হচ্ছে কি না তা সরকারকে আরেকবার ভেবে দেখতে হবে।
লাইসেন্স প্রাপ্ত ড্রাইভার গাড়ী চালাচ্ছে কি না, ট্রাফিক রুলস ড্রাইভারদের জানা আছে কি না ইত্যাদি নিশ্চতকরণও উন্নয়নের আওতাভুক্ত। সুতরাং উন্নয়ন শুধু রাস্তাঘাট করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে বরং মানুষ কতটুকু সচেতনমুখী হচ্ছে, মানুষ কতটুকু জানছে সেগুলোও উন্নয়নের অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ।
প্রকৃত উন্নয়ন বলতে রাস্তাঘাটে মৃত্যুহার কতটা কমছে বা বাড়ছে সেটির একটি স্ট্যান্ডার্ড মান জানা থাকলে উন্নয়নের পরিমাপটুকু করা যেত।