সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মধ্যে দ্বন্দ্ব : সত্য নাকি মিথ্যা?

সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মধ্যে দ্বন্দ্ব : সত্য নাকি মিথ্যা?

www.dhakastaff.com

একজন মাশরাফির অবসর যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে ভুগাবে সেটা অনুমেয় ছিল অনেকটাই। মাশরাফির পর কে হবেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ওয়ানডে অধিনায়ক সে প্রশ্ন তো ছিলই সাথে এটাই ছিল যে, বাংলাদেশে ক্রিকেট দলে কোন বিশৃঙ্খলা তৈরী হবে না তো?

গত প্রায় এক দশকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সিনিয়র খেলোয়াড় ছিলেন মাশরাফি বিন মর্ত্তুজা। সাকিব, মাহমুদউল্লাহ তামিমদের বড় ভাই হিসেবে দলকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। কোন খেলোয়াড় ই ব্যাক্তিগত কিংবা দলগত পক্ষপাতী হয়ে বিশৃঙ্খল হতে পারেননি মাশিরাফি যুগে। সেই মাশরাফি অবসরে যাবেন হয়তো কয়েক মাসের মধ্যেই। কি হবে বাংলাদেশ দলের মাশরাফিবিহীন ভবিষ্যৎ? ইতোমধ্যে গুঞ্জন উঠেছে মাহমুদউল্লাহ এবং সাকিবের মধ্যকার দলাদলির খবর।

সত্যি ই কি সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহর মধ্যে কোন রকম দলাদলি কিংবা বিশৃঙ্খলা চলছে? যদিও মাহমুদউল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন, সাকিবের সাথে তার কোন মনোমালিন্য নেই এমনকি তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন যেন তাদের ড্রেসিংরুম ঘুরে আসেন সাংবাদিকরা। তিনি অভিযোগ করেন যে, সাংবাদিকরাই এটা নিয়ে বাড়তি অহেতুক সংবাদ উপস্থাপন করেছেন।

তবে অস্বীকার করবার উপায় নেই যে, সাকিব মাহমুদউল্লাহর মধ্যে কিঞ্চিৎ দ্বন্দ্ব নেই। গত বিশ্বকাপে সাকিব ব্রিফিং করতে এলে, তাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি বরং এড়িয়ে গেছেন কোন কথা না বলেই। ফলে সাংবাদিক এবং বাংলাদেশি ভক্তদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি সাকিব মাহমুদউল্লাহর মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে? পরবর্তীতে মাঠেও পরিলক্ষিত হয় ব্যাপারটি। সকল খেলোয়াড়দের সম্পর্ক স্বাভাবিক মনে হলেও সাকিব মাহমুদউল্লাহ নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন।

তবে আশার কথা, খোজ নিয়ে জানা গেছে সাকিব মাহমুদউল্লাহর মধ্যকার সম্পর্ক এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে তবে কবে নাগাদ আবার তা ভেঙে যায় তা কিন্তু সন্দেহ তৈরী করছে অনেকের।

বাংলাদেশে এরকম দলাদলি কিংবা দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। এর আগেও এরকম দ্বন্দ্ব দেখা গেছে তামিম-মুশফিক কিংবা তামিম-সাকিবের মধ্যেও তবে তা কখনোই উচ্চপর্যায়ে যেতে পারেনি। মাশরাফি সবার সিনিয়র থাকায় বেশি বড় হওয়ার আগেই যে যার মত স্বাভাবিক হয়ে গেছেন। মাশরাফির অনুপস্থিতে কি ঘটবে তা হলফ করে বলা না গেলেও সেটি যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মাথা ব্যাথা হয়ে দাঁড়াবে সেটি কিন্তু অনুমেয়।

ক্রিকেটারদের মধ্যে এরকম দলাদলি শুধু যে বাংলাদেশেই তাও কিন্তু নয়। ভারতের বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা তো সবারই জানা। অন্যান্য টিমেও এরকম কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা রয়েছে যা স্বাভাবিক সুতরাং সাকিব মাহমুদউল্লাহর সাময়িক এই দ্বন্দ্ব নিয়ে ভাবছে না বিসিবি এমনটাই শুনা গেল বিসিবির এক কর্মকর্তার মুখে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন যে, এখানে ব্যাক্তিগত দ্বন্দ ভুলে যদি সবাই দেশের জন্য চিন্তা করে তবে এরকম দলাদলি অনেকটাই কাটানো সম্ভব।

মাশরাফি পরবর্তী অধিনায়ক কে হবেন:

মাশরাফির অবসরের পর কে হবেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক? মাশরাফির অবসর নিয়ে যত না ভাবনা তার চেয়ে বিসিবির এই ভাবনাই যেন বেশি। সাকিব, মাশরাফি বিহীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কিছুদিন আগেই শ্রীলঙ্কা সফর করে আসলো। তামিম ইকবালের অধিনায়কত্বে সেই সিরিজটি ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশ দলের। সুতরাং তামিমকে অধিনায়ক বানানোর কোন সম্ভাবনাই আর নেই বিসিবির।

মুশফিকের ক্ষেত্রেও আছে নানা আলোচনা সমালোচনা। মুশফিক আগেও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন কিন্তু তার অধিনায়কত্বে বিস্তর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ছিল ফলে পুনরায় মুশফিককে অধিনায়ক করার কথা ভাববে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বাকি অপশনগুলোর মধ্যে সাকিব আর মাহমুদউল্লাহ ই সিনিয়র। বাকি সদস্যগুলোর মধ্যে রুবেল হুসেন মোটামুটি সিনিয়র হলেও দলে তিনি অনিয়মিত এবং অধিনায়ক হিসেবে মানানসই নন বলেই মনে হয়। এক্ষেত্রে হয়, মাহমুদউল্লাহকে অধিনায়ক করতে হবে নয়তো সাকিবকে। মাহমুদউল্লাহর চেয়ে সাকিবের অভিজ্ঞতার ঝুড়ি বেশি হওয়ায় বিসিবি হয়তো সাকিব আল হাসানকেই বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক করবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ